এই কদিন গলি দিয়ে সিএনজি তো দুর, মটরসাইকেলও যেতে দেখিনি। আজ দেখি রিক্সা, সিএনজি, মোটরসাইকেল সবই চলছে। ভ্যান, ভার সব নিয়েই সব্জী আসছে। ভ্যানওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সব্জীর গাড়ি কি এসেছে? ( না এলে এসব সব্জী আনতে পারতোনা) ঘাড় নেড়ে বল্লো, হ্যাঁ। বল্লাম, তোমাদের কেউ আটকায় নি। ঘরে থাকার কথা তো! মনে হলো দৃষ্টি দিয়ে ভস্ম করে দিবে। মানে মানে জানালা থেকে সরে এলাম। ভাবলাম, পেটে ক্ষিদে নিয়ে নীতি বাক্য শুনতে ভালো লাগার কথা না। আমার নিয়মিত যে চাচামিয়া সব্জী দেন, উনি গত দু/তিন ধরে আসছেন না। আল্লাহ জানে উনি কেমন আছেন? সেই কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থেকে এসে সিলেটে থেকে সব্জী বিক্রি করেন। তিন ছেলেমেয়ে উনার। বড় ছেলে বছর তিনেক আগে নেভীতে চান্স পেয়েছে। এখন মংলাতে আছে। এর পর মেয়ে। মেয়ে ইডেনে অনার্স ফাইনাল ইয়ার। ছোট ছেলেটা এবার এইচএসসি দিচ্ছিলো। বছর তিনেক আগে উনাকে কিছু টাকা আর কাপড় সাহায্য দিতে চেয়েছিলাম। উনি জোড়হাত করে তা নিতে অস্বীকার করে অনুরোধ করেছিলেন যেন তা অন্য কাউকে দেই। আর বার বার বলছিলেন, " আম্মা! মনো কষ্ট নিওন না যে! উনার পরনের পাতলা সার্টের লম্বালম্বি ছেঁড়ার দিকে তাকিয়ে আমি চোখের পানি লুকিয়ে বলেছিলাম, না, না, চাচা! আমি কিছু মনে করিনি। তখনই জেনেছিলাম সন্তানদের মানুষ করার জন্য উনার এই জীবন যুদ্ধের কথা। ভীষন শ্রদ্ধা করি আমি উনাকে। উনার অনুপস্থতি আমায় চিন্তিত করছে। মনে হচ্ছে, উনার মোবাইল নাম্বারটা যদি থাকতো!
সুরঞ্জনা মায়া - নাগরিক সাংবাদিক বাংলাদেশ |
#আবোলতাবোলকথামালা
নাগরিক সাংবাদিক বাংলাদেশ Citizen Journalist Bangladesh
No comments:
Post a Comment
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। খুব শীঘ্রই আপনার উত্তর দেওয়া হবে।